কুমিল্লায় মাদরাসা থেকে পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে লাফিয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় ৫তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পালাতে গিয়ে মোঃ ফয়সাল (১২) নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিক্ষার্থী ফয়সাল জেলার বি-পাড়া উপজেলার মহালক্ষীপাড়া গ্রামের মৃত আবুল ফজল মাষ্টারের ছোট ছেলে।

রবিবার (২০জুন) বিকালে বাঙ্গরা বাজারের মারকাযুস সুন্নাহ মাদরাসায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। ফয়সাল উক্ত মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। সে গত ৭জুন ২০২১ মাদরাসায় ভর্তি হয়।

জানা যায়, শিক্ষার্থী ফয়সাল কয়েকদিন ধরে বাড়িতে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করছিল। কিন্তু মাদরাসা থেকে যেতে দেওয়া হয়নি। মাদরাসার পক্ষ থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার জন্য বলা হয়। পরে রবিবার বিকালে প্রতিদিনের মত শিক্ষকদের সাথে ফয়সাল মাদরাসার ছাদে উঠে। মাগরীবের নামাজের পূর্বে সকল শিক্ষার্থী যখন ছাদ থেকে নামতে যায় তখন ফয়সাল দৌড়ে গিয়ে ছাদ থেকে লাফ দিলে ভবনের পাশে থাকা দোকানের টিনের চালা ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে যায়। সাথে সাথে মাদরাসা ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মারকাযুস সুন্নাহ মাদরাসাটি ওই ভবনের ৫ম তলায় অবস্থিত। খেলাধূলার জন্য ছাত্রদেরকে নিচে নামতে না দিয়ে প্রতিদিন ছাদে নেয়া হয়। ছাদের চারদিকে অল্প উচ্চতার রেলিং দেয়া থাকলেও তা ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়। যা খেলাধূলার জন্য অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ। বাঙ্গরা বাজারে এমন আরো ৩টি মাদরাসা রয়েছে যেগুলো ৪তলা এবং ৫তলায় অবস্থিত। এবিষয়ে এলাকাবাসী প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মারকাযুস সুন্নাহ মাদরাসার শিক্ষক মামুন মিয়া জানান, আসর নামাজের পর আমি ও আরেকজন শিক্ষক ছাত্রদের সাথে ছাদে ছিলাম। যখন সময় শেষ তখন ছাত্রদেরকে একসাথে করে নামতে বলি। অন্যরা নামার জন্য আসলেও ফয়সাল না এসে দৌড়ে গিয়ে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে যায়।

এ ব্যপারে মাদরাসার পরিচালক হাফেজ মোঃ আরিফ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনার সময় মাদরাসার পাশে এক দোকানে বসা ছিলাম। আমাকে যখন জানানো হয় তখন যে দোকানের চালার উপড় পড়েছে সেই দোকানে যাই। দোকানটি তখন তালাবদ্ধ ছিল। দোকানদারকে দিয়ে তালা খুলে ভিতয়ে গিয়ে দেখি ফয়সাল মাটিতে পড়ে আছে। তার মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে। তাৎক্ষনিকভাবে আমরা তাকে মুরাদনগর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখন ডাক্তার দেখে তাকে মৃত ঘোষনা করেন। তিনি আরো জানান, ফয়সাল এর আগেও কয়েকটি মাদরাসা থেকে পালিয়ে এসেছে। আমার আত্মীয় হওয়ায় তার মা তাকে আমার এখানে এনে ভর্তি করান। সে যেন আবার পালিয়ে না যায় সে জন্য আমরা তাকে সবসময় চোখে চোখে রাখতাম।

শিক্ষার্থী ফয়সালের মা, বড় ভাই ও মামার সাথে কথা বললে তারা জানান, আত্মীয়ের মাদরাসা হওয়ায় তার (ফয়সালের) ভালোর জন্যই ভর্তি করিয়েছি যেন হাফেজ হতে পাড়ে। আমাদের ভাগ্যে হয়তো নেই। মাদরাসার বিরুদ্ধে তাদের কোন অভিযোগ নেই বলেও জানান।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, এ ব্যপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page